চিনের টাইপ ১৫-এর জবাব ভারতের জোরাওয়ার! মুখোমুখি ট্যাঙ্ক-যুদ্ধে এগিয়ে কে?


newsagartala24.com Images

Agartala, Jul 12, 2024, ওয়েব ডেস্ক থেকে


নয়া দিল্লি: যুদ্ধ অনেক আধুনিক হয়েছে। ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন নতুন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি হচ্ছে। তবে, এখনও যুদ্ধে অপরিহার্য হালকা ওজনের ট্যাঙ্ক। সম্প্রতি সামনে এসেছে ভারতের সাম্প্রতিকতম ট্যাঙ্ক, জোরাওয়ার। ডিআরডিও-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ট্যাঙ্কটি তৈরি করেছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো সংস্থা। যুদ্ধক্ষেত্রে জোরাওয়ারকে মোকাবিলা করতে হতে পারে চিনের লাইট ট্যাঙ্ক, টাইপ-১৫-এর। দুই দেশের হাতেই রয়েছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে দারুণ উন্নত দুটি ট্যাঙ্ক। কিন্তু, এই দুই ট্যাঙ্কের মুখোমুখি মোকাবিলা হলে কী হবে? জিতবে কে? দেখে নেওয়া যাক প্রযুক্তিগত, বৈশিষ্টগত এবং কৌশলগত দিক থেকে কোন ট্যাঙ্ক এগিয়ে আছে?

ভারতের জোরাওয়ার ট্যাঙ্কের ভর ২৫ টন। তুলনায় চিনা ট্যাঙ্কটি বেশ ভারী। ভর ৩৬ টন। দুটি ট্যাঙ্কেই ৩জন করে ক্রু বসতে পারে। দুটি ট্যাঙ্কেরই প্রধান আগ্নেয়াস্ত্র হল, ১০৫ মিলিমিটারের মেশিন গান। দ্বিতীয় অস্ত্র হিসেবে ভারতের জোরাওয়ারে রয়েছে কোঅ্যাক্সিয়াল ৭.৬২ মিমি মেশিন গান। চিনের ট্যাঙ্কটিতে রয়েছে কোঅ্যাক্সিয়াল ৫.৮ মিমি মেশিন গান। দুটি ট্যাঙ্কেরই সর্বোচ্চ গতি ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। তবে এই গতি ওঠে পাকা রাস্তায়। কিন্তু, ট্যাঙ্ক তো আর শুধু পাকা রাস্তায় চলার জন্য তৈরি হয় না। অফরোড, অর্থাৎ, রাস্তার বাইরে মাঠেঘাটে জোরওয়ার ট্যাঙ্কটি চলতে পারে সর্বোচ্চ ৩৫-৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে। আর অফরোডে, চিনের টাইপ ১৫ ট্যাঙ্কের গতি ৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। দুটি ট্যাঙ্কেরই ১০০০ অশ্বক্ষমতার শক্তি রয়েছে।

এবার দেখে নেওয়া যাক কোন কোন জায়গায় চিনের টাইপ ১৫ ট্যাঙ্কের থেকে এগিয়ে রয়েছে জোরাওয়ার ট্যাঙ্ক। টাইপ ১৫ ট্যাঙ্কের তুলনায় পাওয়ার-টু-ওয়েট অনুপাতে অনেক এগিয়ে রয়েছে জোরাওয়ার ট্যাঙ্ক। আগ্নেয়াস্ত্রর ক্ষমতাতেও এগিয়ে জোরাওয়ার। সুরক্ষা, নজরদারি এবং যোগাযোগের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে জোরাওয়ার। নীচ দিয়ে উঢ়ে যাওয়া কপ্টার, শত্রুপক্ষের প্রতিরোধ ব্যবস্থা, শত্রুপক্ষের শক্ত ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করার জন্যই নকশা করা হয়েছে এই ট্যাঙ্কটির। ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার সর্বোচ্চ গতির সঙ্গে, ট্যাঙ্কটি স্থলে ও জলেও চলতে পারে। ফলে, জোরাওয়ার ট্যাঙ্ক কৌশলগত যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় সুবিধা দেয়। তিনজন ক্রু মিলেই ট্যাঙ্কটিকে চালাতে পারে বলে, ম্যানপাওয়ারও অনেক বেঁচে যায়। এর পাশাপাশি, জোরাওয়ার ট্যাঙ্ককে, আকাশপথে, রেলপথে বা সড়কপথে বয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। ফলে, এই ট্যাঙ্ক মোতায়েন করাটাও অনেক সহজ হয়।

চিনের টাইপ ১৫ ট্যাঙ্কে যে ১০৫ মিলিমিটারের মেশিনগানটি রয়েছে, তা দিয়ে ৩ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত করা যায়। এই মেশিনগানে ব্যবহার করা হয় ন্যাটো ১০৫ মিমি ট্যাঙ্ক গুলি ব্যবহার করা যায় এই মেশিনগানটিতে। এই মেশিনগানে অটোলোড ব্যবস্থা আছে। অর্থাৎ, গুলি ফুরিয়ে গেলে, নিজে থেকেই ফের গুলি লোড হয়ে যায়। তাই তিন জনের বেশি ক্রু লাগে না এই ট্যাঙ্ক চালাতে। গুলি ছোড়ার ক্ষেত্রেও কখনও কমতি হয় না। শুধু তাই নয়, হিট, হি, এপিএফএসডিএস-এর মতো ৩৮ ঝরনের ১০৫ মিমি কার্তুজ ব্যবহার করা যায় এই মেশিনগানে। ২০০০ মিটার দূরেও ইস্পাতের বর্মে ৫০০ মিলিমিটার গভীর ছেঁদা তৈরি করতে পারে এই মেশিনগানের গুলি। এছাড়া, লেজার রেঞ্জফাইন্ডার, ব্যালিস্টিক কম্পিউটার, মিটিঅরোলজিক্যাল সেন্সর, থার্মাল ইমেজিং সাইট, মিলিমিটার ওয়েভ ব়াডার, কমান্ডার্স প্যানারোমিক সাইটের মতো বেশ কিছু আধুনিক সেন্সর রয়েছে টাইপ ১৫ ট্যাঙ্কে।

লাইট ট্যাঙ্ক প্রযুক্তিতে ভারত ও চিনের উন্নতির পরিচয় এই দুই ট্যাঙ্ক। জোরাওয়ার ট্যাঙ্ক তার বহুমুখিতা, দেশি প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কৌশলগত চলাচলের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, আগ্নেয়াস্ত্রর ক্ষমতা, অত্যাধু নিক সেন্সর এবং ক্রু সদস্যদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে টাইপ ১৫ ট্যাঙ্ক।