রাজ্যকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলার অধিকার নেই রাজ্যপালের: অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি
Kolkata, Jun 30, 2024, ওয়েব ডেস্ক থেকে
কলকাতা: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহ প্রতিদিনই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। গতকালই রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের এই সংঘাতের আবহ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্য়ায়কে। রাজ্য সরকার ‘ঋণগ্রস্ত’ হয়ে পড়ছে, সে কথা মানলেও একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর এক্তিয়ারের কথা।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “এই রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। এই সংক্রান্ত খবর আগেও প্রকাশিত হয়েছে। রাজ্য সরকার যেভাবে একের পর এক ঋণ নিয়ে চলেছে, তাতে রাজ্য অত্যন্ত ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু সেই ব্যাপারে রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকতে বলতে পারেন না। সেটা মন্ত্রিসভার প্রধান অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। রাজ্য সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বলার অধিকারও রাজ্যপালের ঠিক নেই। শুনলাম, এই ব্যাপারে তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন”
শনিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সঙ্গে রাজ্যপাল বৈঠক করেছেন। তারপরই রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট রাজ্যপালের। তারপর থেকে আবারও বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা প্রসঙ্গে। যদিও এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সংবিধানের ৩৬০ ধারায় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার ব্যবস্থা রয়েছে। তার দ্বারা গোটা দেশে কিংবা ভারতের কিছু রাজ্যে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা হতে পারে। সেটা রাষ্ট্রপতি করতে পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা খুব একটা নেই।”
রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সেক্ষেত্রে রাজ্য ও রাজভবনের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরি না হওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট বার বার বলছে, রাজ্যপালরা সংবিধানের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন। তাঁরা বিল আটকে রাখবেন না। রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করবেন না। অনেক সময়েই রাজ্যপালরা সেই সাংবিধানিক রীতি নীতি মানছেন না। সেই জন্যই সংঘাত হচ্ছে। রাজ্যপালদের সাংবিধানিক রীতি নীতির মধ্যে থেকেই কাজ করা উচিত।”