হিংসাজর্জর মণিপুরে ফের গোলাগুলি
Agartala, Jul 27, 2023, ওয়েব ডেস্ক থেকে
ইমফল, ২৭ জুলাই : হিংসাজর্জর মণিপুরে প্রায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বেসরকারি গ্রাম সুরক্ষা স্বেচ্ছাবাহিনীর দুই সদস্য। ঘটনা আজ বৃহস্পতিবার ভোর চার থেকে পাঁচটার মধ্যে রাজ্যের চূড়াচাঁদপুর জেলায় সংগঠিত হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এর আগে গতকাল মোরে জেলায় গোলাগুলি এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল।
বেসরকারি সূত্রের খবর, আজ ভোরে চূড়াচাঁদপুর জেলার অন্তর্গত কাংভাই এলাকায় শুরু হয় বন্দুকযুদ্ধ। গোলাগুলির ঘটনা চলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপী। গুলিবিদ্ধ গ্রাম সুরক্ষা স্বেচ্ছাবাহিনীর দুই সদস্যকে চূড়াচাঁদপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভরতি করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষ-পীড়িত এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
এদিকে আজ রাজ্য পুলিশের উচ্চস্তরীয় এক সূত্র জানিয়েছে, টেংনুপাল জেলার সীমান্ত শহর মোরে এলাকায়ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল মোরে শহর সংলগ্ন এলাকায় গোলাগুলি এবং বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট পুড়িয়ে লুটপাটের চেষ্টা করা হয়েছে। ওই ঘটনার সঙ্গে কুকি জঙ্গিরা জড়িত বলে সন্দেহ করছে প্রশাসন। বলা হচ্ছে, সেখানে অবস্থানরত নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলিযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা।
মণিপুর পুলিশের শীর্ষ সূত্রটি জানিয়েছে, বুধবার বেশ কয়েকজন কুকি মহিলাকে মেইতই সম্প্রদায়ের মালিকানাধীন দোকানপাট লুট থেকে রোখার চেষ্টা করেছিলেন আসাম রাইফেলসের জওয়ানরা। তখন বিনাপ্রোচনায় নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর পর বিক্ষুব্ধ জনতা মোরে শহরের ৬, ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মেইতেইদের বেশ কয়েকটি মেইতেই বাড়ি এবং দোকানে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে।
যার ফলে অন্য রাজ্য থেকে আগত অভিবাসীদের অনেক দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের খবর, উত্তেজিত জনতা প্রায় ১৫-১৬টি বাড়ি এবং একটি গেস্ট হাউস আংশিকভাবে পুড়িয়ে দিয়েছে। সূত্রের খবর, গভীর রাত পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। তবে ওই গোলাগুলিতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে মোরেতে সংগঠিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইমফল পূর্বের আকামপাট ত্রাণ কেন্দ্রের বাস্তুচ্যুত আবাসিকরা সিংজামেই সেতুতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। বাস্তুচ্যুতরা মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। সিংজামেই সেতুতে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরে দলের চার প্রতিনিধিকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।
মণিপুরের পরিস্থিতি এখনও অস্থিতিশীল। এর আগে ২৫ জুলাই একদল দুষ্কৃতী কাংপোকপি জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। ঘটনাটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিমাপুর থেকে বাসগুলো আসার সময় সাপোরমেইনায় সংগঠিত হয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, স্থানীয় উত্তেজিত জনতা সাপোরমেইনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবহৃত মণিপুরের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের দুটি বাস থামিয়ে তাতে অন্য সম্প্রদায়ের কোনও মানুষ বসে আছে কিনা তা পরীক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। তাদের আবদারে সায় না দেওয়ায় ওই দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতী দলটি।