কম ওজনের শিশুকন্যাকে সুস্থ করে নজিরস্থাপন করলGB হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক
আগরতলা, Nov 07, 2024, ওয়েব ডেস্ক থেকে 2024
সবচেয়ে কম ওজনের একটি সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে সুস্থ করে নজিরস্থাপন করল জিবি হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক , নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। জিবি হাসপাতালে এই ধরনের ঘটনা আগে হয়নি। আজ জিবিপি ও এজিএমসি কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা তথা রাজ্যের বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডাঃ সঞ্জীব দেববর্মা । শিশুকে সুস্থ করে তার মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হাসপাতালে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রে জিবি হাসপাতালের একের পর এক সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।। গত সাত আগস্ট কমলপুরের বাসিন্দা তানিয়া বেগম ধলাই জেলা হাসপাতাল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ৬৭০ গ্রামের এক কন্যা সন্তানের জন্মদেন। জন্মের পর থেকেই শিশুটি নানা ধরনের শারীরিক ব্যাধিতে ভুগছিল । এই অবস্থায় ধলাই থেকে চিকিৎসক জিবি হাসপাতালে শিশুটিকে পাঠিয়ে দেয়। রক্তাল্পতা থেকে শুরু করে চোখের রেটিনার সমস্যা সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন হাসপাতালের এন আই সি ও বিভাগে প্রধান বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর শ্রীবাস দাস।
তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকা চিকিৎসক নার্স সকলে মিলে তিন মাসের মধ্যে শিশুটিকে সুস্থ করে তোলে। বর্তমানে শিশুটির ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় কিলো। একত্রিশ অক্টোবর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় শিশুটি। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক শ্রীবাস দাস। নবজাতকের শারীরিক ও অবস্থার কথা তুলে ধরে ডক্টর শ্রী দাস বলেন এই ধরনের কম ওজনের প্রিম্যাচিউর শিশুদের ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিল রোগ দেখা দেয়। এন আই সি ইউ তে রেখে প্রতিনিয়তাকে শরীরের উষ্ণতা দেওয়ার জন্য প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মাঝেমধ্যে তার শরীরের ওজন একটু কমতে থাকে। রক্তের স্বল্পতা দেখা দেওয়া রক্ত দিতে হয়। শরীরে শিরা উপশিরা এতটাই দুর্বল ছিল নাভির মধ্য দিয়ে তাকে ওষুধ ইনজেকশন দেওয়া হতো। শরীরে শর্করা খুবই কম ছিল। ঘন ঘন ইনফেকশন রেখা দিত। এই ধরনের শিশুর ক্ষেত্রে এটা হয় স্বাভাবিক। তিনি আরো বলেন এই ধরনের প্রিম্যাচিউরড শিশুর জীবনের ঝুঁকি অত্যন্তই প্রকট থাকে। শতকরা ৯৯% এই ধরনের শিশু বেঁচে থাকার প্রবণতা থাকেনা । স্বল্প পরিকাঠামোর মধ্যেও এই ধরনের কাজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলে আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর অনুপ কুমার সাহা। এদিকে শিশুটির মা জানিয়েছে জিবি হাসপাতালে আনার পরেই চিকিৎসকরা তাদের গুরু দায়িত্ব যথারীতি পালন করেছে, তিনি আরো বলেন শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলার ক্ষেত্রে নার্সদের ভূমিকা ও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আরো বেশি সংখ্যক নার্স এর প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও যেভাবে এই ওয়ার্ডের নার্সরা তার শিশুকে পরিষেবা প্রদান করেছে তার জন্য তিনি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।শিশুটি সুস্থ হওয়ায় খুশি তার পরিবার। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জিবি হাসপাতালের সুপারের দায়িত্বে থাকা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডক্টর তপন মজুমদার, বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর জয়ন্ত রায় সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।