আর ভয় নয় । সন্রাস ও হুমকির কাছে মাথা নত নয় CITU
আগরতলা, Jan 06, 2025, ওয়েব ডেস্ক থেকে 2024
জিরানীয়া মহকুমায় ভয়ের প্রাচীর ভেঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের উদ্দীপনাময় লড়াকু মিছিল ও গনডেপুটেশন আর ভয় নয় । সন্রাস ও হুমকির কাছে মাথা নত নয় । শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও নায্য দাবি আদায়ে লড়াই সংগ্রামকে আরও বেগবান করবই ।.গরীব শ্রমজীবীদের হুসিয়ারী শাসককে সন্রাস করে দমিয়ে রাখা রাখা যাবে না ।
সিআইটিইউ জিরানীয়া মহকুমা কমিটির উদ্যোগে ৬ জানুয়ারি মহকুমাভিওিক মিছিল ও ডেপুটেশন থেকে সংগ্রামী আওয়াজ ধ্বনিত
হয় । সকাল ১০ টা থেকে মহকুমা এলাকার জিরানীয়া, রানীরবাজার , খয়েরপুর, খুমলুং , চম্পকনগর, ললিতবাজার , পুরাতন আগরতলা ,
মান্দাই ব্লক এলাকা ,. দূর্গানগর সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রমী শ্রমজীবী মানুষ মান্দাই বাজারে সিপিআই (এম ) অফিসের সামনে জমায়েতে সমবেত হয় । কাস্তে হাতুড়ি সিআইটিইউ খচিত লাল ঝান্ডায় সুসজ্জিত মিছিল মান্দাই বাজার এলাকার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পার্টি অফিস প্রাঙ্গনে সভায় মিলিত হয় । মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন সিআইটিইউ রাজ্য সভাপতি মানিক দে , জি এম পি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাধাচরন দের্ববমা , সিআইটিইউ জিরানীয়া মহকুমা সম্পাদক তপন দাস ও সুভাষ দে , জিএমপি নেতা সিতানাথ দের্ববমা, রঞ্জন দের্ববমা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।
১০ দফা দাবিতে সাড়া জাগানো গর্জমান মিছিল থেকে আওয়াজ উঠে --- গরীব শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে রেগা ও টুয়েপের কাজ বছরে ২০০ দিন দিতে হবে । দৈনিক মজুরি ৬০০ টাকা করতে হবে । প্রকল্প কর্মীসহ সমস্ত শ্রমক্ষেত্রে মাসিক মজুরি ২,৬০০ টাকা করতে হবে । নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে । নির্মাণ শ্রমিক কল্যান পর্ষদ প্রকল্পের সুযোগ নির্মান ক্ষেত্রের শ্রমিকদের দিতে হবে এবং শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করনে নিয়মকানুন সরলীকরন করতে হবে ।
গরীব শ্রমজীবী মানুষের কাজের সংকট নিরসনে ব্যাপক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে । মিড ডে মিল কর্মীদের ১২ মাসের মজুরি দিতে হবে । ৬০ বছরের বেশি বয়স হওয়া সমস্ত শ্রমিকদের মাসিক ১০, ০০০ টাকা পেনসান দিতে হবে ।
বেআইনিভাবে বাতিল ৪০ হাজার ভাতা দ্রুত ফিরিয়ে দিতে হবে । দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে । শ্রমিক বিরোধী সর্বনাশা নয়া শ্রম কোর্ড বাতিল কর । শ্রমজীবী মানুষের গর্জমান সংগ্রামী মিছিল ও শ্লোগান নতুন লড়াইয়ের বার্তা দিল ।
মান্দাইবাজারে শ্রমজীবী জনতার সামনে সভায় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মানিক দে বলেন , রাজ্যে বিগত ৭ বছরে স্বৈরাচারী বিজেপি, আই পি এফ টি ও তিপ্রা মথা সরকারের শাসনে
জনগনের সর্বনাশ করা ছাড়া একটি কাজও জনগনের স্বার্থে করে নি । চারিদিকে কাজের হাহাকার । গরীব মানুষ অর্ধাহার অনাহারে থাকছে । এনিয়ে সরকারের কোনো হেলদোল নেই । রাস্তাঘাট বেহাল , বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হওয়ার পথে । বড়মুড়া , রুখিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার মুখে ।
জিরানীতা মহকুমা হাসপাতালের জন্য আসাম আগরতলা সড়কের পাশে ভাস্কর কবরা পাড়ায় নির্ধারিত জায়গা অনৈতিকভাবে পরিবর্তন করা হচ্ছে । যা বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে
সিদ্ধান্ত ছিল । জিরানীয়া মোটর ষ্ট্যান্ররা বিন্দুমাত্রও উন্নয়ন সংকট নেমে এসেছে । তিনি বলেন , শ্রমজীবীদের যতগুলো প্রকল্প চালু হয়েছিল বিজেপি শাসনে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । এই সরজনগণের সর্বনাশকারী সরকার । তাই সকলস্তরের জনগনকে আরও বেশি বেশি করে লড়াইয়ের ময়দানে সামিল করতে তিনি আহবান জানান ।
সভায় জিএমপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাধাচরন দের্ববমা সিআইটিইউ'র উদ্যোগে মিছিল ও গনডেপুটেশনকে অভিনন্দন জানিয়ে দাবি গুলোকে সমর্থন জানিয়ে বলেন , রাজ্যের প্রতিটি এলাকায় কাজের তীব্র সংকট চলছে । বিশেষ করে উপজাতি জনপদে এই সমস্যা আরও ভয়াবহ । মানুষকে অনাহারে থাকতে হচ্ছে । কোথাও কোথাও মারাও যাচ্ছে । প্রচুর মানুষকে রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে কাজের জন্যে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে । রেগার কাজ প্রতি বছরই কমছে । বিভিন্ন দপ্তরের কাজও নেই । মানুষ বাচবে কি ভাবে ? কোথায় সরকার ? দপ্তরের কাজও নেই । মানুষ বাচবে কি ভাবে ? কোথায় সরকার ? সরকারি অর্থ কোথায় খরচ হচ্ছে ? সর্বত্র শুধু দুর্নীতির খবর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে । ভাতা প্রাপকদের ভাতা নিয়ে সরকার চরম অনৈতিক কাজ করেছে । রাজ্যে ৪০ হাজারের উপর ভাতা বাতিল করা হল । গরীব মানুষের পেটে সরকার লাথি মারল। এটা মেনে নেওয়া যায় না । বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষ মারাত্মক বিপদে পরেছেন । মারাত্মক ভাবে বাড়তি বিল উঠছে । উপজাতি এলাকার অনেক ভিলেজে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ যায় না । কিন্তু বিল উঠছে ভীষণভাবে । কি হচ্ছে ? এ অবস্থায় লড়াই ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই । সামনের দিনে লড়াই আরও তীব্র করার আহবান জানান । সভায় সিআইটিইউ রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পমশংকর দও বলেন , রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে কাজের জন্যে মানুষদের রাস্তায় বসে থাকতে হতো না । বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হতো না । তখন কাজ মানুষকে খুজতো । শ্রমজীবী মানুষ সংকটকে ভীষণ জর্জরিত । শ্রমজীবীদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বিজেপি , তিথামথা ও আই পি এফ টি সরকারের শাসনে । এই সরকার মানুষের সমস্যার কথা শুনতে চায় না । সরকার ও শাসক দল রাজ্য জুড়ে নৈরাজ্য কায়েম করেছে । এর বিরুদ্ধে আন্দোলনকে শক্তিশালী করেই সরকারকে নীতি পরিবর্তনে বাধ্র করতে হবে । জিরানীয়া মহকুমায় সংগ্রামী শ্রমজীবী জনগনকে তিনি কর্মসূচিতে সামিল হওয়ায় সকলকে অভিনন্দন জানান সভা শেষে সিআইটিইউ
মহকুমা কমিটির মহকুমা সম্পাদক তপন দাসের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল জিরানীয়া মহকুমা শাসক ও ম্যাজিষ্ট্রেডের নিকট ডেপুটেশনে মিলিত হয়ে ১০ দফা দাবি সনদের স্মারকলিপি তুলে দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন , প্রতিটি দাবি দ্রুত কার্যকরী ক উদ্যোগ নিতে বলেন । মহকুমা শাসক দাবিগুলোর যুক্তিকতা স্বীকার করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে প্রতিনিধি দলকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । প্রতিনিধি দলে মহকুমা সম্পাদক তপন দাস ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন মনোরঞ্জন দাস , শ্যামল রুদ্রপাল , রনঞ্জিৎ দের্ববমা , হামিদ মিঞা , ললিত দাস ।